
ভারতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলনে নিহত ১০৭


জনতা ডেস্ক
ভারতের উত্তর প্রদেশে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে অন্তত ১০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় ২৭ জনের মৃত্যুর তথ্য দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এই সংখ্যা বেড়ে যায়। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইম্স গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছে, পদদলনের ঘটনা ঘটে হথরসের একটি প্রার্থনা সভায়। স্থানীয় কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বাস এবং ট্যাম্পুতে করে অনেকের নিথর দেহ নিয়ে আসা হয়েছে। ওই সময় তাদের আত্মীয়-স্বজনরা কান্নাকাটি করছিলেন। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে এ ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে এবং কিভাবে ভয়াবহ এই পদদলনের ঘটনা ঘটল সেটির কারণ খুঁজে বের করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া এক নারী জানিয়েছেন, প্রার্থনা সভাটি আয়োজন করা হয়েছিল স্থানীয় এক ধর্মীয় গুরুর সম্মানে। অনুষ্ঠান শেষে যখন মানুষ বের হয়ে যাচ্ছিলেন তখন পদদললেন ঘটনা ঘটে। মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে সুভাম শর্মা নামের এক ব্যক্তি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। এতে দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকজন নারীর মরদেহ পড়ে রয়েছে। তিনি ওই ভিডিওতে লিখেছেন, বাইরে বের হওয়ার সময়, প্রার্থনা সভার হলের একটি ছোট দরজা দিয়ে সবাই বের হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু দ্রুত বের হতে গিয়ে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। হথরস বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অশিষ কুমার জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৫০ থেকে ৬০ জনের মৃত্যুর ব্যাপারে জানতে পেরেছেন তারা। দুর্ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেছেন, হাথরসের কাছে সিকান্দ্র রাও পুলিশ স্টেশনের একটি গ্রামে পদদলনের ঘটনা ঘটেছে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকরা আমাকে বলেছেন ৫০ থেকে ৬০ জন মারা গেছেন। এটি একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান ছিল। এটির অনুমতি দিয়েছেন উপবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। প্রশাসন নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। কিন্তু অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব আয়োজকদের উপর ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, এটা ছিল ধর্ম প্রচারক ভোলে বাবার সৎসঙ্গ সভা। আলিগড় রেঞ্জের ইন্সপেক্টর জেনারেল শলভ মাথুর জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকালে এটাহ ও হাথরস জেলার সীমান্তে ওই জায়গায় জমায়েত হওয়ার জন্য সাময়িক অনুমতি দেয়া হয়েছে। একের পর এক মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে। স্থানীয় সূত্রের বরাতে ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, একটি প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল মুঘলাগড়ি গ্রামে। একসঙ্গে প্রচুর মানুষ জমায়েত করেছিলেন ওই সভায়। কি কারণে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে। দেহগুলোকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সৎসঙ্গে উপস্থিত লোকজন প্রচণ্ড গরমে সমস্যায় পড়ে যান। এরপরই লোকজন দৌড়াদৌড়ি শুরু করলে পদপিষ্টের ঘটনা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অনুষ্ঠানের সময় প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্রতা ছিল।
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ